গণপরিবহনে যৌন নিপীড়ন বন্ধে চালু হয়েছে হ্যারেসমেন্ট এলিমিনেশন লিটারেসি প্রোগ্রাম (হেল্প) অ্যাপ। প্রাথমিকভাবে মোহাম্মদপুর থেকে সায়েদাবাদ রুটের আটটি থানা এলাকার নারী যাত্রীদের জন্য চালু হয়েছে এ সেবা। অ্যাপে অভিযোগ জানানোর সঙ্গ সঙ্গে জিপিএস ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবে উদ্ধারকারী দল।
নারীদের হেনস্তা-হয়রানি যেন নিত্যদিনের ঘটনা। যৌন নিপীড়ন ও উত্ত্যক্তের পাশাপাশি গণপরিবহনে ঘটছে ধর্ষণের ঘটনাও। ব্র্যাকের গবেষণা বলছে, গণপরিবহনে চলাচলরত ৯৪ শতাংশ নারী যৌন নিপীড়নের শিকার।
নারী যাত্রীরা বলছে, সড়কে যাতায়াতে সবাই নিরাপদ না। বিশেষ করে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাসে চড়ায় অস্বস্তিবোধ হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে যাতায়াতে ভয় পাচ্ছেন অনেক নারী।
নারী হয়রানির বন্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অর্থায়নে ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড ও আর্টিকেল ১৯ এর সহায়তায় হেল্প নামের নতুন অ্যাপটি চালু করেছে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার ও সুইচ বাংলাদেশ। প্লে-স্টোর থেকে সলুসনশপিন লিখলে হেল্প অ্যাপ আসবে। সেটি নামিয়ে শুধু মোবাইল নম্বর দিয়েই অ্যাপে প্রবেশ করে সেবা নিতে পারছেন নারীরা।
অ্যাপে রাখা হয়েছ ইমারজেন্সি বাটন। লিখিতভাবেও অভিযোগ দেয়ার অপশন রয়েছে। নাম পরিচয় গোপন রেখে নিজের এমনকি অন্যের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাও তুলে ধরা যাবে এই অ্যাপে।
অ্যাপের মিডিয়া ক্যাম্পেইনার এ এস এম মাহমুদুল হাসান জানান, প্রাথমিকভাবে মোহাম্মদপুর থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত রুটের আটটি থানা এলাকায় চালু হয়েছে এই সেবা। ঘটনাস্থলের এক কিলোমিটারের মধ্যে থানার নম্বর যুক্ত থাকবে এতে। অ্যাপে যুক্ত আছে ট্রিপল নাইনও। পাশপাশি এসব এলাকার ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গঠন করা হবে কুইক রেসপন্স টিম।
ধীরে ধীরে সব থানার নারী যাত্রীদের জন্য অ্যাপটি চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন হাসান।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম বিভাগ) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, মাঠ পর্যায়ে অ্যাপে আসা অভিযোগগুলো গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম বলেন, ‘নারীদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি, পুরুষের কর্তৃত্ববাদী আচরণ ও ঘটনার বিচার না হওয়ায় গণপরিবহনে নারী নিপীড়ন বেড়েই চলেছে। এই ধরনের পরিস্থিতে এমন অ্যাপকে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে দেখছি।’
অ্যাপে আসা অভিযোগগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নিতে সরকারের হস্তক্ষেপও কামনা করেন তিনি।